
আপনারা অনেকেই আছেন যাদের প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন মানুষকে ইমেইল পাঠাতে হয়। আমরা সবাই ই-মেইল লিখতে পারি, পাঠাতে পারি, অন্যকে কপি দিতেও পারি। আর ইমেইল পাঠানোর সময় নিশ্চয়ই ‘To’ এর পাশে ‘CC’ এবং ‘BCC’ অপশন দুটিও খেয়াল করেছেন। তবে খেয়াল করলেও এগুলোর সঠিক ব্যাবহার ভfলো ভfবে জানেন না। বিশেষ করে ‘BCC’ বিষয়টি বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা বা স্পষ্ট নয়। তাহলে চলুন, আজকে এগুলো কী এবং এদের পার্থক্য ও কখন কোনটি ব্যবহার করবেন তা জেনে নেয়া যাক।
TO কি ও কেন?
যাকে ইমেইল পাঠাবেন তার মেইল এড্রেস এখানে দিবেন। একাধিক ব্যাক্তির কাছে একই মেইল দিতে হলে কমা দিয়ে একটির পর একটি দিন। এক্ষেত্রে যাকে বা যাদেরকে মেইল দিচ্ছেন সবাইকে আপনি এড্রেস করছেন। মানে সবাই মেইলের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন আপনি অফিসের ম্যানেজার। আপনাদের একটি পিকনিক আয়োজন হবে। আপনি তার আহবায়ক। আপনি আপনার অধীনস্ত ৫ জন এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজারকে জানাবেন বিষয়টা। একটা মিটিং আহবান করলেন যেখানে এই ৫ জন উপস্থিত থাকবে এবং কার্যসূচী ও লোকসংখ্যা উল্লেখ থাকবে। মিটিং এর সময়সূচী জানাবেন সবাইকে। এই লিস্টের সবাই জানতে পারবে আপনি কাকে কাকে মিটিং এ ডাকছেন বা অন্য সহযোগীতায় কারা থাকবে। সবাই সবাইকে রিপ্লে বা রিপ্লে টু অল দিতে পারবে। এরা TO ছাড়াও CC ও BCC তে যাদেরকে জানানো হয়েছে তাদের নাম ধাম, ই-মেইল দেখতে পারবে বা তাদের কে রিপ্লে টু বা রিপ্লে টু অল দিতে পারবে।
CC কি ও কেন?
Cc – সিসির (CC) পূর্ণ রূপ হচ্ছে ‘Carbon Copy’। আপনি তাকে এ্যাড্রেস করে মেইল করছেন না কিন্তু তিনি অবহিত থাকছেন বিষয়টা। কমা দিয়ে এখানে একাধিক ব্যাক্তিকে যুক্ত করতে পারবেন। এই লিস্টের সবাই TO, CC, BCC এর লোকজনকে দেখতে পাবে। যেমন আপনি আপনার অফিসের বসকে CC দিলেন। তাহলে উনি অবগত থাকল আপনার কাজ সম্পর্কে। আপনার প্রোমোশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু। অনেক দায়িত্ব ও এড়ানোর টেকনিক এটা। কোন সমস্যা হলে পরে বলবেন আপনি তো জানতেন বিষয়টা। তিনি ইচ্ছা করলে নাক গলাতে পারবেন এ বিষয়ে। তিনিও ইচ্ছা করলে রিপ্লে বা রিপ্লে টু অল দিতে পারবেন সবাইকে।
ধরুন আপনি কাউকে ইমেইল করছেন এবং সেই একই মেইলটি একাধিক মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাচ্ছেন যারা সেই ইমেইলটির সাথে সম্পর্কিত হলেও উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে কোন সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না, তবে ইমেইলের কপিটি তাদের কাছে থাকাও জরুরী বলে মনে করছেন। এক্ষেত্রে মূলত CC সুবিধাটি ব্যবহার করা হয়। এতে করে যারা যারা এই ইমেইলটি পাবে প্রত্যেকেই এক অন্যের ইমেইল এড্রেস জানতে পারবে এবং কাকে কাকে এই বার্তা পাঠানো হয়েছে তা জানতে পারবে।
BCC কি ও কেন?
Bcc -কী বিসিসি’র পূর্ণ রূপ হচ্ছে ‘Blind Carbon Copy’। সিসির মত এটিও একই রকম কাজ করে তবে এখানে পার্থক্য হলো, প্রাপক নিজের ইমেইল ঠিকানা ছাড়া আর কারো ইমেইল ঠিকানা দেখতে পারবে না এবং এভাবে সে জানতেও পারবে না বার্তাটি তাকে ছাড়া আর কাকে বা ক’জনকে পাঠানো হয়েছে। ধরুন , আপনি একই ইমেইল আপনার ৫ জন বন্ধুকে একই সাথে পাঠাতে চাইছেন কিন্তু তারা একে অপরের ইমেইল অ্যাড্রেস জেনে যাক তা আপনি চাচ্ছেন না, এক্ষেত্রে বিসিসিতে ইমেইল অ্যাড্রেসগুলো যুক্ত করে দিতে পারেন।
আপনি যদি একই ইমেইল একাধিক ব্যক্তির কাছে পাঠাতে চান তবে কারা কারা পেয়েছেন এটা যদি গ্রাহকদেরকে না জানাতে চান তাহলে আপনি Bcc বক্স তাদের ইমেইল ব্যবহার করবেন। এতে করে একই বার্তা একাধিক ব্যক্তির কাছে গেলেও প্রাপকরা কেউ কারোর ইমেইল এ্যাড্রেস জানতে পারবে না।
সাধারণত: কোনো প্রতিষ্ঠান যদি কোনো তথ্য তার গ্রাহকের কাছে পাঠাতে ইমেইল ব্যবহার করে তবে bcc ব্যবহার করবে কারণ তাতে তার ব্যক্তিগত তথ্য (ইমেইল ঠিকানা) অপর গ্রাহকের কাছে প্রকাশ হবে না। আর আপনি যখন আপনার অফিসের দুইজন কলিগের সাথে কোনো মিটিং এ আলোচনার পর একটি তথ্য তাদের দু’জনকেই জানানোর জন্য ইমেইলের সাহায্য নেন তখন cc ব্যবহার করতে পারবেন। তখন দুজনই অবগত থাকবেন যে আপনি বার্তাটি তাদের সরবরাহ করেছেন।
প্রয়োজনটা যখন অনেককেই একই মেইল করা কিন্তু আপনি জানেন না TO, CC তে সবার আইডি দিবেন কিনা তখন TO, CC বাদ দিয়ে BCC তে দিন সব আইডি।
কেন CC ও BCC গুরুত্বপূর্ণ?
বর্তমান যুগে ই-মেইল আইডি হল একটা ব্যক্তিগত আইডেন্টিটি। আপনার ইমেইলের কোন অপব্যবহারের ফলে আপনার অনেক ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে। আপনি যদি ব্যাবসায়ি হন তাহলে অবশ্যই চাইবেন না আপনার ইমেইল লিস্ট কেউ জানুক। এবং ইমেইল মার্কেটারদের হাতে আপনার ইমেইল পৌঁছাক আর ঘন ঘন বিভিন্ন অফার সেন্ড করে আপনার ইনবক্স ভরে ফেলুক। তাই নিজে এগুলোর সঠিক ব্যবহার শিখে নিজের প্রাইভেসী রক্ষা করেন, অন্যের প্রাইভেসীকেও সম্মান করেন। স্প্যামিং এর হাত থেকে বাঁচতে সিসি এবং বিসিসি এর ব্যাবহার জানাটা খুবই দরকার।
আশা করি সিসি এবং বিসিসি সম্পর্কে আপনারা পরিস্কার ধারণা দিতে পেয়েছেন। সিসি এবং বিসিসির এই ব্যবহার বাধ্যতামূলক না হলেও এগুলো ইমেইলের পাঠানোর ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং প্রফেশনাল লাইফে এগুলোর চর্চা করাটাও জরুরী।
very important post. thank you