
Table of Contents
ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার সাথে যারা সম্পৃক্ত এক্সপায়ার্ড ডোমেইন (expired domains) শব্দটি তাদের কাছে পরিচিত। এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনে ওয়েবসাইট তৈরী করার ফলে বেশ কিছু এসইও বেনিফিট পাওয়া যায়। বেশিরভাগ এসইও এক্সপার্টরা নতুন ডোমেইন কেনার চাইতে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনা বেশি পছন্দ করেন।
আমরা জানি যে, একটি ওয়েবসাইট তৈরীর করে সেটিকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করানোর মাধ্যমে অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়া। কারণ, আপনার ওয়েবসাইটে যখনই ভিজিটর আসা শুরু করবে, তখন আপনি সেটিকে বিভিন্নভাবে মানিটাইজ করে সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
আর ওয়েবসাইট তৈরীর প্রথম কাজটাই হলো একটা ভালো ডোমেইন কিনে ফেলা।
একটি নতুন কেনা ডোমেইন থেকে শুরুতেই কোন ধরনের এসইও বেনিফিট পাওয়া যায় না। কেমন হয় যদি আপনার কেনা ডোমেইনটি কেনা থেকেই আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করতে সাহায্য করতে থাকে?
ডোমেইন কেনার শুরুর দিন থেকেই সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক পাওয়া নিশ্চয়ই ভাগ্যের ব্যাপার হবে, তাই না? ঠিক এই সুবিধাটাই একটি ভালো মানের এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার মাধ্যমে আপনি পেতে পারেন। ভালো এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুঁজে পাওয়া ও নির্বাচন করার উপায় নিয়েই আমার আজকের এই লেখা।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন(expired domains) কি?
একটি ফ্রেশ ডোমেইন আর এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের মধ্যে পার্থক্য হলো, ফ্রেশ ডোমেইন ইতিপূর্বে কেউ কখনো কেনেনি আর এক্সপায়ার্ড ডোমেইন আপনার আগেও হয়েতো কেউ কিনেছে। কোন ডোমেইন কেউ সারা জীবনের জন্য কিনে নিতে পারে না। একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ডোমেইনটি রিনিউ করতে হয়।
যদি কেউ রিনিউ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেই ডোমেইনটি পুনরায় আবার বিক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। ইচ্ছা করলেই যে কেউ তখন ওই ডোমেইনটি আবার কিনে নিতে পারেন। মূলত এই ধরনের পূর্বে ব্যবহৃত ডোমেইনগুলোকেই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন বলা হয়ে থাকে।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার সুবিধা:
একটি গল্প দিয়ে বিষয়টা বোঝানো শুরু করি। মনে করুন, রহিম সাহেবের একটি রেন্ট-এ-কার এর ব্যবসা আছে এবং ৫ বছর ধরে সুনামের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এখন ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে বা অন্য কোন ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হওয়ার কারণে রহিম সাহেব উক্ত ব্যবসাটি করিম সাহেবের কাছে বিক্রয় করে দিলেন।
এখন যে ব্যক্তিটি এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করলেন সে তো ইচ্ছা করলে নতুন করেও একটি রেন্ট-এ-কার ব্যবসা চালু করতে পারতেন। কিন্তু সে রহিম সাহেবের ব্যবসাটিই কেনো ক্রয় করলেন জানেন? কারণ, নতুন করে ব্যবসা শুরু করলে ঐ ব্যক্তির নতুন করে গ্রাহক সংগ্রহ করতো হতো, যেটা এখন আর প্রয়োজন হবে না। কারণ, রহিম সাহেব ৫ বছরে যে পরিমাণ গ্রাহক এবং সুনাম অর্জণ করেছেন সেটির সুফল ভোগ করার পাশাপাশি ঐ ব্যক্তি চাইলে ব্যবসাটিকে আরো বেশি উন্নত করতে পারবেন।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার পেছনেও একজন এসইও এক্সপার্টের ঠিক একই ধরনের মানসিকতা কাজ করে। কারণ, যারা এসইও করেন, তারা খুব ভালো করেই জানেন যে সার্চ ইঞ্জিন কোন সাইটকে র্যাংক করার জন্য সবচেয়ে বেশি যে ৩টি বিষয়কে প্রাধান্য দেয় তা হলো ডোমেইনের বয়স, ডোমেইন অথরিটি এবং এর ব্যাকলিংক প্রোফাইল। আর এগুলি অর্জণ করা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যার কারণে যে কোন ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করতে অনেক সময় নিয়ে নেয়।
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ব্যতিক্রম কিছু বিষয় ছাড়া কোন ডোমেইন এক্সপায়ার হয়ে গেলেও এর বয়স, অথরিটি বা ব্যাকলিংক প্রোফাইলের পরিবর্তন হয় না। যার ফলে ডোমেইন যিনি কিনবেন, তার সময় ও পরিশ্রম ২টাই অনেক কমে যাবে। আর এই কারণে এই ধরনের ডোমেইনগুলি এত বেশি জনপ্রিয়।
অনেকে আবার এই ডোমেইনগুলি খুঁজে বের করে পরে আবার সেটি বেশি দামে বিক্রয় করে থাকেন। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে একটি সুন্দর নাম এবং ভালো প্রোফাইল থাকলে সেটি অনেক বেশি মূল্যে বিক্রয় করা খুবই সহজ কাজ। আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা ডোমেইন কেনা বেচাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আপনিও চাইলে ডট বিডি(.bd) ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন | সার্ভার ও মালিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম জেনে নিতে পারেন।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার অসুবিধা:
উপরের উদাহরণের সূত্র ধরেই বলি, করিম সাহেব রহিম সাহেবের ব্যবসাটি কিনে লাভবান এ কারণে হয়েছিলেন কারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে ব্যবসা করেছে। কিন্তু যদি এমন হতো যে, রহিম সাহেব ব্যবসায়ী হিসেবে খুবই খারাপ ছিলেন এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ সেবা নিতো না। তাহলে কিন্তু গোটা ব্যপারটাই বদলে যেতো। করিম সাহেব ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি কিনে কোন লাভ করতে পারতেই না।
অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা সচল থাকা অবস্থায় গুগল, ইয়াহু সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের চোখে স্প্যামার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আবার অনেক ওয়েবসাইটে দেখা যায় তাদের ডোমেইনে যে-সব ব্যাকলিংক এসেছে তার মধ্যে অনেকগুলাই গ্যাম্বলিং বা অ্যাডাল্ট সাইট থেকে।
এ-সব ডোমেইন কিনলে কোন ধরনের লাভ তো আপনি পাবেনই না, উল্টো সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার ওয়েবসাইটও যে খুব তাড়াতাড়ি পেনাল্টি খাবে, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। ফলে, আপনার সমস্ত বিনিয়োগ এবং পরিশ্রম বৃথা চলে যাবে শুধুমাত্র একটি ডোমেইনের কারণে।
প্রতিটি ব্যবসাতেই কম বেশি ঝুঁকি থাকে। এটিও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে, বুদ্ধিমান তারাই যারা এই ঝুঁকি নিয়েও নিজেদের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে এমন সব ডোমেইন খুঁজে বের করনে যা সব ধরনের ত্রুটিমুক্ত। এগুলি চেনার বেশ কিছু উপায় এসইও এক্সপার্টরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন।
উপরে যে-সব বিষয় নিয়ে কথা বললাম, আমি জানি সেগুলি পড়ে অনেকেই দ্বিধায় ভুগছেন যে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনা উচিৎ হবে নাকি হবে না। আমি বলবো, আপনি যদি সময় ব্যয় করে একটি ভালো মানের এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনে নিতে পারেন, তাহলে অবশ্যই সেটি কেনা উচিৎ।
দ্রুত সময়ে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় জায়গা করে নেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো পদ্ধতি অনেক কমই আছে। এখন প্রশ্ন আসে কিভাবে চিনবেন যে কোনটি কেনা উচিত আর কোনটি কেনা উচিত নয়? চিন্তার কোন কারণ নেই, ভালো মানের এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুঁজে বের করার সবগুলো কিলার টিপস্ নিয়ে খুব শিঘ্রই আমরা হাজির হবো। সে পর্যন্ত চোখ রাখুন হৈচৈ বাংলার পাতায়।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন নিয়ে আর্টিকেল আরও অনেক আগেই পাওয়ার হক রাখেন আপনারা। কিন্তু নানা দিক চিন্তা করে লিখা হয়নি। সবসময়েই ভাবতাম, আর্টিকেল লিখলে বেশিরভাগ মানুষই এইদিকে ঝুকতে চাইবে। তাতে করে কেউ কেউ লাভবান হলেও সঠিক অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে অনেকেই ভুল করতে পারে।
আর কেউ ভুল করুক, তা আমি চাইনা। তারপরেও ঠিক যে যে বিষয় গুলো দেখে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনতে হবে, তার সবগুলোই আমি তুলে ধরবো। প্রতিটি বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ, এর কোন ১টি যদি নেগেটিভ হয়, বাকিগুলো সব পজিটিভ হলেও সেটা এড়িয়ে যেতে হবে।
কিছু স্পর্ষকাতর বিষয় আমি ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাবো, এতে আমার ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ জড়িত নেই, কিন্তু আপনাদের জন্যে বিষয়টা কিছুটা কঠিন করে দেয়া আরকি। বলতে পারেন, একটা ফিল্টারিং প্রসেস। এই আর্টিকেলের পাশাপাশি গুগল ঘেটে পড়াশোনা করলেই ফিল্টারটি পার করতে পারবেন আপনি।
আপনি সফল হন, সেটাই আমার কাম্য। কিন্তু ছোট্ট কিছু ফিল্টারিং প্রসেসের কারণে যদি সফলতার সম্ভাবনা বাড়ে এবং ভুল ডোমেইন সিলেক্ট করার ব্যার্থতা কমে তাতে ক্ষতি নেই, বরং লাভ আছে।
কি কি বিষয় মাথায় রেখে ডোমেইন চেক করতে হবে, তা বলার আগে কোথায় কোথায় ডোমেইন পাওয়া যাবে তা জানিয়ে নেই।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কোথায় কিনতে পাবেন
প্রতিদিন সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ ডোমেইন এক্সপায়ার্ড হচ্ছে। এর মধ্যে ভালো-খারাপ সব ধরনের ডোমেইন রয়েছে। এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুঁজে পাওয়ার জন্য বেশ কিছু টুলস বা ওয়েবসাইট রয়েছে। নেমজেট, ড্রপক্যাচ সার্ভিস গুলো অকশন এর মাধ্যমে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন বিক্রি করে থাকে। তাদের ওয়েবসাইটে দেখানো ডোমেইনের নাম গুলো বেশ আকর্ষণীয় হলেও দাম অকশন এর কারনে কিছু বেশি হতে পারে। তবে ভালো ডোমেইন এর ক্ষেত্রে দাম তেমন কোনো ফ্যাক্টর না।
ExpiredDomains.net
ফ্রি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুঁজে পেতে ভালো একটা ওয়েবসাইট হলো এক্সপায়ার্ড ডোমেইন.নেট। এদের সার্চ ফিল্টার ব্যাবহার করে ক্রাইটেরিয়া গুলো ব্যাবহার করে ডোমেইন খুঁজতে এবং সেই ডোমেইন কিনে নিতে পারবেন।
দুনিয়ার কতো শতো এক্সপায়ার্ড ডোমেইন যে এদের ডাটাবেজে আছে তার হিসেব নেই। অলরেডি এক্সপায়ার্ড হয়েছে এমন ডোমেইন থেকে শুরু করে খুব তারাতারি এক্সপায়ারড হবে এবং অকশনে থাকা ডোমেইনও দেখা যায় সাইটিতে।
ওদের শক্তিশালী ফিল্টারিং সুবিধা ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাবে ফিল্টার করে ডোমেইন বের করতে পারবেন।
গোড্যাডি অকশনস
এখানে ফ্রিতে আপনি ডোমেইন দেখতে পারলেও ডোমেইনে বিড করার জন্যে অকশনস এ অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। সবচেয়ে বেশি ডোমেইন সংখ্যা নিয়ে খুব সম্ভবত গোড্যাডিই অকশন করে।
এখানে ভালো খারাপ দুই ধরনের ডোমেইন ই আছে। আপনাকে সবকিছু চেক করে বিড করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
গোড্যাডিতে অনেক ডোমেইনের অকশন দীর্ঘদিন ধরে চলে। যদি কোন ডোমেইন এর অকশন শেষ হওয়ার আগে অনেক দিন বাকি থাকে তাহলে সরাসরি বিড না করে দিয়ে, ওয়াচ লিস্টে রাখতে হবে।
আপনি ডোমেইন নিয়মিত চেক করবেন, কেউ বিড করলো কিনা, করলে কতো করলে সেটা জানতে পারবেন। একদম যেদিন বিক্রি হয়ে যাবে সেইদিন অনুযায়ী হায়েস্ট এমাউন্ট বিড করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আগে বিড করলে অন্যরাও বিড করবে এবং ডোমেইনের প্রাইস বাড়বে।
Domcop
পুরাতন ডোমেইন খুঁজে বের করার জন্যে ডমকপ বেশ ভালো একটা টুল, ফ্রিতে এর ব্যবহার খুবই সীমিত। প্ল্যান নিয়ে এখানে আকাউন্ট করলে বিভিন্ন সাইট থেকে অকশন, ব্যাকওয়ার্ড, এক্সপায়ার্ড ইত্যাদি ডোমেইনের তালিকা দেখতে পারবেন এবং সহজেই ফিল্টারিং করার সুবিধা পাবেন।
ডমকপের ফিল্টারিং প্রসেস অনেক সহজ। ডমকপের নিজস্ব স্ক্র্যাপার দিয়ে ডোমেইন স্ক্র্যাপিং করা সম্ভব। এছাড়া ফ্রেশড্রপ, প্রিমিয়াম ড্রপস ইত্যাদি সাইটও ডমকপের মতোই।
ডোমেইন স্ক্র্যাপিং
বিভিন্ন রকমের স্ক্র্যাপার ব্যবহার করে পুরাতন ডোমেইন খুঁজে বের করা সম্ভব। যারা একটা দুইটা ডোমেইন নিয়ে কাজ করতে চান তাদের জন্যে মোটেও এই পদ্ধতি না। কারণ এটি ব্যায়বহুল বিষয়।
ডোমেইন হান্টার গ্যাদারার, ডমকপ, স্ক্র্যাপবক্স ইত্যাদির মাধ্যমে ডোমেইন স্ক্র্যাপিং করা যায়।
অন্যান্য
নেইমজেট, নেইমসিলোসহ বিভিন্ন সাইট আছে, যাদের মাধ্যমে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুঁজে বের করতে পারবেন। এক্সপায়ার্ড ডোমেইন পাওয়া গেলেই শেষ নয়, এবার সেগুলোকে চেক করার পালা।
এটা পড়তে পারেনঃ ডিএনএস বা ডোমেইন হাইজ্যাকিং কি? হাইজ্যাক হলে কি করবেন?
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার আগে যেসব বিষয় দেখতে হবে
আপনি ডোমেইন এ ইনভেস্ট করার জন্য অথবা নিজের ওয়েবসাইটে ব্যাবহারের জন্যই যে কাজের জন্যই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুঁজুন না কেন, এগুলো কেনার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
অ্যাংকর প্রোফাইল
ভালো এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার আগে সর্বপ্রথম চেক করতে হবে অ্যাঙ্কর প্রোফাইল। অ্যাংকর টেক্সট প্রোফাইল কি জিনিস, ইহা খায় না মাথায় দেয় যদি জেনে না থাকেন তাহলে জেনে নিন।
কন্টেক্সচুয়াল-ব্যাকলিংক
কোন আর্টিকেলের ভেতরে কোন লেখার মধ্যে যেসব লিঙ্ক থাকে অর্থাৎ যে লেখায় ক্লিক করলে আরেকটি লিংকে যাবে সেটাই অ্যাংকর টেক্সট।
এখানে “আর্টিকেলের মান কিভাবে যাচাই করবেন” এটি অ্যাংকর টেক্সট। এরকম কি কি অ্যাংকর এ সাইট ব্যাকলিংক পেয়েছে সেটাই মূলত অ্যাংকর প্রোফাইল।
পুরাতন ডোমেইন চেক করার আগে সবার আগে এটিই চেক করে দেখে নিতে হবে। কারণ অন্য কোন কিছু না দেখেই শুধুমাত্র অ্যাংকর প্রোফাইল দিয়েই ডোমেইনটি স্প্যামি কিনা সেটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়া যাবে। স্প্যামি কিনা নিশ্চিত হওয়া গেলেও ভালো কিনা সেটার নিশ্চয়তার জন্যে পরবর্তী বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যাংকর প্রোফাইল আমি দুইভাবে চেক করি, ম্যাজেস্টিক আর Ahrefs। তবে বেশিরভাগ সময়েই ম্যাজেস্টিক দিয়ে চেক করি। দুইটা টুল দিয়ে চেক করে নেয়াই উত্তম।
অ্যাংকর প্রোফাইলে যদি জাপানি/চাইনিজ ভাষার অ্যাংকর থাকে তাহলে নিশ্চিত ভাবেই ধরে নিতে পারেন যে সেটি একটি জাপানিজ পিবিএন ছিল পূর্বে। নিচে যে অ্যাংকর টেক্সট প্রোফাইল দেওয়া আছে।
এরকম থাকলে যতোই আবেগ আসুক, এই ডোমেইন নেয়া যাবেনা এবং এই ডোমেইনের আর কিছু চেক করারও দরকার পরবেনা।
এছাড়া, অ্যাগ্রেসিভ অ্যাংকর প্রোফাইল থাকলেও সেই ডোমেইন আমি এভয়েড করবো। নিচের ছবিতে কিওয়ার্ড অ্যাগ্রেসিভ অ্যাংকর প্রোফাইল আছে । এরকম ডোমেইনেরও আর কিছু চেক না করে সরাসরি বাদ দিয়ে দিবেন।
আর নিচের ছবিতে একটি সঠিক এবং দারুণ অ্যাংকর প্রোফাইল দেখা যাচ্ছে। এখানে কনজিউমার রিপোর্ট একটি ব্র্যান্ড নেইম এবং সবগুলো অ্যাংকর টেক্সটই একে ঘিরে।
এরকম অ্যাংকর প্রোফাইল থাকলে সেটা নির্দ্বিধায় একটা পজিটিভ সাইন প্রকাশ করবে। তবে এটা দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়া যাবে না। প্রথম ধাপ পার হলাম মাত্র, এরপর আমাদের আরও কয়েকটি ধাপে যেতে হবে।
ব্যাকলিংক
অ্যাংকর প্রোফাইল এর পর আপনাকে দেখতে হবে সাইটের ব্যাকলিংকগুলো। অল্প কিছু ব্যাকলিংক দেখেই সাইট কিনে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা, যদি সাইটের ২০-৩০টা ব্যাকলিংক থাকে তাহলে অবশ্যই সবগুলো ব্যাকলিংক ওপেন করে চেক করতে হবে।
১০০ ব্যাকলিংক থাকলেও তার প্রতিটি ওপেন করে দেখাবেন যে কোনটা কি রকম ব্যাকলিংক, কেমন ওয়েবসাইট এর কোন জায়গা থেকে এসেছে।
ব্যাকলিংক ম্যানুয়ালি চেক করে নিলে আপনি মোটামোটি নিশ্চিত হতে পারবেন ডোমেইনটি সম্পর্কে। যদি ব্যাকলিংক সংখ্যা আরও বেশি হয় সেক্ষেত্রে অন্তত সর্বোচ্চ সংখ্যক চেক করার চেষ্টা করবেন। আর অভিজ্ঞতা থাকলে শুধু চোখ বুলালেই বুঝতে পারার কথা।
অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে ভালো ব্যাকলিংক এবং খারাপ ব্যাকলিংক আমি কিভাবে বুঝবো। যদি এমন প্রশ্ন আপনার মনে এসে থাকে আমি আপনাকে বিনীত অনুরোধ করবো আপনি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন এখনই কিনবেন না। আপনার আরও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে। এখন নিজে দেখে বুঝতে না পারলে ভুল করে বসবেন।
সাধারণত কমেন্ট ব্যাকলিংক, প্রোফাইল ব্যাকলিংক, সাইডবার ব্যাকলিংক, ফুটার লিংক জাতীয় লিংক এর আধিক্য থাকলে আমি সেই ডোমেইন না নেয়ার পক্ষে। কারণ এইটুকুতে গেস করা যায় ডোমেইনটা খুব একটা উপকারী হবেনা।
অনেককেই দেখি এক্সপায়ার্ড ডোমেইন নিতে চান, কিন্তু ওয়েবসাইটের কোন ব্যাকলিংক নেই বলে জানান। এরকম কিছুর পেছনে কোনো যুক্তি নেই। এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের মূল বিষয়ই ব্যাকলিংক, যদি এই ব্যাকলিংকই না থাকে, যে উপকার পাওয়ার আশা করছেন, সেটা পাবেন না।
ওয়েব আর্কাইভ হিস্টোরি
ওয়েব আর্কাইভে সকল ওয়েবসাইটেরই ইতিহাস সংরক্ষিত থাকে। তাই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার আগে ওয়েব আর্কাইভে যতোগুলো সময়ের হিস্টোরি আছে প্রতিটা সময় চেক করে দেখে নিতে হবে।
অনেকে ১-২টা সময়ের হিস্টোরি চেক করেই ডোমেইন কিনতে চায়, এটা ঠিক নয়। অবশ্যই সবগুলো সময়ের চেক করতে হবে। কারণ এর মধ্যে যে কোনো একটা সময়ে হয়তো কয়েক মাসের জন্যে হলেও সাইটকে পিবিএন হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বা কোন এডাল্ট জাতীয় কিছু থেকে থাকতে পারে।
যদি কোন এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের হিস্টোরি এখানে দেখা না যায় তাহলে সেই ডোমেইন কেনা উচিত নয়। ডোমেইন একটা ইনভেস্টমেন্ট। এখানে ভুল করলে সেই ভুলের মাসুল পরবর্তীতে গুনতে হবে। ওয়েব আর্কাইভ এর পাশাপাশি Screenshots.com সাইটটিও ব্যবহার করতে পারেন।
হোস্টিং হিস্টোরি
এটাও দেখে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, সাধারণত এটা চেক না করলেও ভুল করার সম্ভাবনা থাকেনা উপরের ৩টা চেক সঠিক হয়। তারপরেও সব দিক থেকে নিশ্চয়তা পেতে ওয়েবসাইটের হোস্টিং হিস্টোরি চেক করতে হবে।
ডোমেইনটুলস ওয়েবসাইটটি হোস্টিং হিস্টোরি সম্পর্কে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য দেয়। কিন্তু সেজন্যে পেমেন্ট করতে হবে।
তবে কমপ্লিট ডিএনএস এর মাধ্যোমেও চেক করা যাবে, তবে এতে সব সাইটের সকল ডাটা থাকে না।
হোস্টিং হিস্টোরি চেক করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে করে ওয়েবসাইট এর ইতিহাস সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হতে পারেন। ধরুণ ওয়েব আর্কাইভে একটা ওয়েবসাইটের হিস্টোরি আছে কিন্তু মাঝে ২ বছরের কোন হিস্টোরি নেই এবং ঠিক সেই সময়টাতেই খুব সস্তা (যেমন ১ ডলার দামের হোস্টিং) সাইটে হোস্ট করা থাকে তাহলে ধারণা করে নিতে পারেন ঐ সময়ে হয়তো পিবিএন বা তেমন কিছু হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
উপরোক্ত সবকিছুই ঠিকঠাক থাকলে ডোমেইনটি আপনি কিনে নিতে পারেন।
DA/PA, TF/CF চেক করে দেখুন
অনেকেই জানতে চান “এই ডোমেইনের ডিএ এতো, পিএ এতো, এটা কি নেওয়া যাবে?”। যার মনে এরকম প্রশ্নের উদয় হয়, তিনি আরও সময় নিয়ে ভাবুন। এখনই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন আপনার জন্যে না।
ডিএ বা ডোমেইন অথোরিটি এবং পিএ বা পেইজ অথোরিটি – এক্সপায়ার্ড ডোমেইন নির্বাচনের ক্ষেত্রে এগুলো বুলশিট মেট্রিক্স। একটা ডোমেইনের ডিএ হতে পারে ৫০ কিন্তু এর লিংক প্রোফাইল হতে পারে পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য। আবার একটা ডোমেইন একদম পিওর জেমস, কিন্তু সেটার ডিএ হয়তো ২০ ও না।
স্প্যাম স্কোর আরেকটা ফালতু মেট্রিক্স। স্প্যামিং করে শেষ করে ফেলা সাইটে কোন স্প্যাম স্কোর নেই কিন্তু গুগলেও স্প্যাম স্কোর ২ থাকে।
সিএফ বা সাইটেশন ফ্লো, এটাও দেখার দরকার নেই।
টিএফ বা ট্রাস্ট ফ্লো এটা দেখতে পারেন। যদি ব্যাকলিংক সংখ্যা কম হয় এবং টিএফ বেশি হয় তাতে আবেগ আপ্লূত হয়ে যাবেন না। এটা আহামরি কিছু না। অল্প ব্যাকলিংক থাকলে, কয়েকটা ভালো লিংকেই টিএফ বেড়ে যেতে পারে। ব্যাকলিংক সংখ্যা যদি অনেক হয় এবং টিএফ তুলনামূলক বেশি হয় তাহলে সেটা আশাব্যঞ্জক। তারপরেও ১-২টা ডোমেইনের জন্যে এসব মেট্রিক্স দেখে নির্বাচন করবেন না। ব্যাকলিংক প্রোফাইল এবং হিস্টোরিই মুল জিনিস।
ব্যাকলিংক প্রোফাইল যতো সমৃদ্ধ ততো ভালো ডোমেইন।
ডিএ/পিএ বা টিএফ/সিএফ ধুয়ে পানি খাওয়া যাবেনা। তবে যদি শতশত ডোমেইন এর মধ্যে আপনাকে ফিল্টারিং করতে হয় সেক্ষেত্রে ট্রাস্ট ফ্লো দিয়ে বেসিক ফিল্টারিং করতে পারেন।
অ্যাংকর প্রোফাইল সেকশনে স্প্যামি অ্যাংকর এ যে সাইট এর ডাটা রয়েছে সেই সাইটের মজ এবং ম্যাজেস্টিক ডাটা মিলিয়ে নিবেন।
যারা নতুন শুরু করছেন বা পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা নেই তারা এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনা থেকে দূরে থাকবেন। কারণ এখানে পদে পদে ভুল করার যথেষ্ট সম্ভাবনা। তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রেখেই কাজ করি এবং সবাইকে করতে বলি।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন নিয়ে আরও কিছু রিসোর্স –